ইন্টারনেট শব্দটি ইন্টার নেটওয়ার্কের (Inter Network) সংক্ষিপ্ত রুপ। ইন্টারনেট হলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কম্পিউটার সমূহের মধ্যে একটি আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় প্রতিটি কম্পিউটার একটি সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের একটি করে ঠিকানা থাকে। প্রযুক্তির ভাষায় এই ঠিকানাকে আই.পি. অ্যাড্রেস বা ইন্টারনেট প্রোটোকল অ্যাড্রেস বলে। এই আই.পি. অ্যাড্রেস ব্যবহার করে একটি কম্পিউটার সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য কম্পিউটারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি নেটওয়ার্ক (ARPANET) পরীক্ষামূলকভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এ প্রক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তখন থেকেই ইন্টারনেটের যাত্রা শুরু হয়।
পরবর্তীকালে ১৯৮৯ সালে সুইজারল্যান্ডের সার্নের (CERN) বিজ্ঞানীগণ তাঁদের নিজেদের মধ্যে ব্যবহারের জন্য ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) উদ্ভাবন করেন, যা ১৯৯১ সালে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমগ্র পৃথিবীতে একটি বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করে, যা আধুনিক বিশ্বে ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তথ্য আদান-প্রদান, সংবাদপত্র পড়া, সামাজিক যোগাযোগ, পড়াশোনা, গবেষণা, টেলিভিশন দেখা, রেডিও শোনা, তথ্য সংগ্রহ তথা মানুষের পুরো জীবন ব্যবস্থাই হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট নির্ভর। ইন্টারনেট ব্যবহারে মানুষের কর্মকাণ্ড সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে। তবে ইন্টারনেটের অপব্যবহার কখনো কখনো সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। নানারকম অপকর্মের মাধ্যমে হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। তাই ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধ করে মানবকল্যাণে এর ব্যবহার নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।

Comments
Post a Comment
👉 মন্তব্যের ক্ষেত্রে পড়াশোনা বিডির নিয়মাবলী পড়তে ক্লিক করুন এখানে।