Skip to main content

Posts

Showing posts with the label গল্প

মিথ্যা সকল পাপের মূল

একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এর নিকট এক ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মধ্যে তিনটি বদ অভ্যাস রয়েছে। তা হলোঃ মিথ্যা বলা, চুরি করা ও মদ খাওয়া। আমি তিনটি বদ অভ্যাসই ছেড়ে দিতে চাই। কিন্তু এক সাথে এর সব ক'টি ছাড়তে পারছি না। আমাকে একটি একটি করে এগুলো ত্যাগ করার সুযোগ দিন এবং কোনটি আগে ত্যাগ করবো, তা বলে দিন। রাসুল (সা.) একটু চিন্তা করে বললেন, তুমি প্রথমে মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ কর। আর এই ত্যাগ করার ওপর স্থির আছ কিনা, তা জানানোর জন্য মাঝে মাঝে আমার কাছে এসো। সে এতে রাজী হয়ে চলে গেল এবং কোন অবস্থাতেই মিথ্যা বলবে না বলে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করলো। রাতে সে অভ্যাসমত চুরি করতে বেরিয়ে পড়লো। কেননা এটা তো সে ত্যাগ করার ওয়াদা করেনি। কিন্তু কিছুদূর গেলেই তার মনে হলোঃ রাসুল (সা.) এর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি যদি চুরি করেছি কিনা জিজ্ঞাসা করেন, তখন মিথ্যা তো বলা যাবে না। সত্য বলে স্বীকারোক্তি দিতে হবে। আর তাহলে রাসুল (সা.) এর দরবারে অপমান তো সহ্য করতেই হবে। উপরন্ত হাতটাও কাটা যাবে। অনেক ভেবে চিন্তে সে ফিরে এলো। সেই রাতে আর চুরি করতে যাওয়া হলো না। এরপর সে মদ খাওয়ার জন্য গ্লাস হাতে নিয়ে তাতে ...

নবীর শিক্ষা, করো না ভিক্ষা।

একবার এক ব্যক্তি রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে ভিক্ষা চাইল। রাসুল (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার বাড়িতে কি কিছুই নেই? সে বললো একটা কম্বল আছে যার একাংশ পরিধান করি এবং একাংশ বিছিয়ে শুই। আর একটা পেয়ালা যা দিয়ে পানি পান করি। রাসুল (সাঃ) বললেন; যাও, ঐ দুটি জিনিস আমার কাছে নিয়ে এসো। লোকটি তৎক্ষণাত গিয়ে জিনিস দুটি নিয়ে এলো। রাসুল (সাঃ) জিনিস দুটি তার কাছ থেকে নিয়ে নিলেন এবং সমবেত সাহাবীকে বললেন, এই জিনিস দুটি তোমরা কেউ কিনবে নাকি? একজন সাহাবী বললেন, আমি এক দিরহামে নিতে পারি। অপর একজন বললেন, আমি দুই দিরহামে নিতে পারি। রাসুল (সাঃ) দ্বিতীয় ব্যক্তিকে পেয়ালা ও কম্বলটি দিলেন এবং তার কাছ থেকে দুই দিরহাম নিয়ে ঐ লোকটিকে দিলেন। তাকে বললেন, এক দিরহাম দিয়ে খাবার কিনে তোমার পরিবারকে দাও। আর এক দিরহাম দিয়ে একখানা কুঠার কিনে আমার কাছে নিয়ে এসো। লোকটি কুঠার কিনে নিয়ে এলে রাসুল (সাঃ) তাতে আছাড়ি লাগিয়ে দিয়ে বললেন, ''যাও এ দিয়ে কাঠ কাটবে। ১৫ দিনের মধ্যে তোমাকে যেন আমি না দেখি।'' সে নির্দেশ মোতাবেক কাজ করলো। একদিন এসে জানালো যে, দশ দিরহাম লাভ পেয়েছে। এর কিছু দিয়ে সে খাবার এবং কিছু দিয়ে কাপড় কিনল। রাসু...

ক্ষমার প্রতিদান

  ক্ষমার প্রতিদান রাসুল (সাঃ) একদিন মসজিদে বসে আছেন। সাহাবীরা তাঁকে ঘিরে আছেন। এমন সময় রাসুল (সাঃ) বললেন, "এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী।" একথা শুনে উপস্থিত সব সাহাবী (রাঃ) অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকলেন মসজিদের প্রবেশ মুখে। সবার মধ্যে জল্পনা কল্পনা চলছে হয়তো হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) বা হযরত উমর (রাঃ) অথবা এমন কেউ আসছেন যাঁদের বেহেশতের সুসংবাদ আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন একজন সাধারণ আনসার সাহাবী। এমনকি তার নাম পরিচয় পর্যন্ত জানা ছিল না অধিকাংশের। এরপরের দিনেও সাহাবীরা মসজিদে বসে আছেন রাসুল (সাঃ) কে ঘিরে। রাসুল (সাঃ) আবার বললেন,  "এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী।" সেদিনও মসজিদে প্রবেশ করলেন সেই সাহাবী। তৃতীয় দিন রাসুল (সাঃ) সাহাবিদের লক্ষ্য করে আবার ঘোষণা দিলেন,  "এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী।" এবং সাহাবীরা দেখলেন সেই অতি সাধারণ সাহাবীটিই মসজিদে প্রবেশ করলেন। পরপর তিনদিন এই ঘটনা ঘটার পর সাহাবীদের মধ্যে কৌতূহল হলো সেই সাধারণ সাহাবী সম্পর্কে জানার জন্য। ত...

কোন বুড়ি বেহেশতে যাবে না!

কোন বুড়ি বেহেশতে যাবে না! তোমরা একথা নিশ্চয় জান, এই পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যত মানুষ এসেছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নেবে তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানুষ হলেন আমাদের নবীজী। তাঁর আলোকময় বদনখানা ছিল চাঁদের চেয়েও উজ্জ্বল। তাঁর কোমল-সুন্দর আচরণে মোমের মত গলে যেত জাতশত্রুরাও। যারা তাঁর কাছে আসতো তারা কখনো ছেড়ে যেতে চাইতো না নবীজীকে। তাঁর কথা-কর্ম ও চরিত্র ছিল যাদুমাখা, মধুময়। আমাদের নবীজী (সাঃ) যে শুধু সর্বক্ষণ ধর্মের কথাই বলতেন তা কিন্তু নয়। তিনি মাঝে মধ্যে গল্প করতেন, কৌতুক করতেন এবং রসিকতাও করতেন। একবার এক বুড়ি এলো নবীজীর দরবারে। বুড়িকে দেখে নবীজী বললেন, 'কোন বুড়ি বেহেশতে যাবে না!' একথা শুনে তো বুড়ি অস্থির। কেঁদে কেঁদে কাহিল। বুড়ির এ হাউমাউ কান্না দেখে নবীজী তাকে সান্ত্বনার-সুরে ডাকলেন। রসিকতার হাসি হেসে বললেন, আরে তুমি যখন বেহেশতে যাবে তখন কি বুড়ি থাকবে! তখন তো তুমি পূর্ণযৌবনা হয়েই বেহেশতে যাবে। এ কথা শুনে বুড়ি হেসে উঠল, বলল ও-এই কথা!!

দুধে পানি ঢালা হলো না ।। গল্প ।। বিনোদন ।। পড়াশোনা BD

দুধে পানি ঢালা হলো না  নবীজীর শহর মদীনা তখন আঁধার রাতের চাদর মুড়ি দিয়ে গভীর ঘুমে নিঝুম। কোথাও কোন সাড়া শব্দ নেই। কোন কোন ঘর থেকে শুধু ক্ষীণ কণ্ঠে ভেসে আসছে তাহাজ্জুদের তেলাওয়াত কিংবা দু'আ মুনাজাত। এটা অবশ্য রাতের মদীনার পরিচিত আওয়াজ। সেই সময় মদীনার নির্জন পথে দুতি মানুষের ছায়া অতি সন্তপর্ণে হেঁটে চলেছে। কেন? কি তাদের উদ্দেশ্য কে জানে!  এক ঘর থেকে একটি নারী কণ্ঠের আওয়াজ পেয়ে ছায়া দুটি থেমে গেলো। এতো রাতে কীসের কথা! তাদের কৌতূহল হলো। তাই আরো কাছে গিয়ে একেবারে ঘরের সাথে লেগে দাঁড়ালো। সেই নারী কণ্ঠ ব্যস্ত হয়ে বলছে- লায়লা! এই লায়লা! ওঠো, তাড়াতাড়ি ওঠো।  এবার এক বালিকার কণ্ঠ- কেন মা, কী হয়েছে? ― দুধে পানি মেশাও, তবেই না বেশি লাভ হবে, আমাদের অভাব দূর হবে।  ― আম্মা, আমীরুল মুমিনীন ওমর যে নিষেধ করেছেন!  ― বোকা মেয়ে! ওমর কি আর এখন দেখছেন! তাছাড়া আমরা গরীব, অতসব ভাবলে কি আমাদের চলে?  ― কিন্তু ওমরের রব যে দেখছেন! ― ( কিছুক্ষণ নিরবতার পর ) মা, তুমি থিক বলেছো। আমার চোখ খুলে দিয়েছো। আখেরাতের বরবাদি থেকে আমাকে রক্ষা করেছো।  সেই রাতে দুধে আর পানি মেশানো হলো না। তখন প্রা...