Skip to main content

Posts

শ্রমের মূল্য

মানুষের সমস্ত সম্পদ এবং মানবসভ্যতার ভিত্তি রচনাকারী শক্তির নাম শ্রম। শ্রমের কল্যাণেই মানুষ নিজেকে জীবজগতের অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে আলাদা করেছে। মানবজীবনে সাফল্যের জন্য শ্রমের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। শ্রমের মাধ্যমে সভ্যতা বিনির্মাণের পাশাপাশি মানুষ নিজের ভাগ্যকেও গড়ে নেয়। প্রতিটি মানুষের মাঝেই লুকিয়ে রয়েছে অসীম সম্ভাবনা। পরিশ্রমের মাধ্যমেই কেবল সেই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে রুপ লাভ করতে পারে। অন্যদিকে, পরিশ্রম না করলে সেগুলো অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। শ্রমজীবী মানুষ তাদের কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হয়। সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করার বিষয়ে যত্নবান হয়। শ্রমের মূল্য বোঝে বলে তারা সকল শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা নিজের জীবন ও চারপাশের পরিবেশকে সাজিয়ে তোলে। ফলে শ্রমশীল মানুষের জীবন হয় সার্থক। অপর পক্ষে শ্রমবিমুখ মানুষেরা আলস্যে সময় নষ্ট করে।  নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অপরের মুখাপেক্ষী হয়।  তাই সাফল্য তাদের ভাগ্যে ধরা দেয় না। সাধারণ মানুষের কাছেও তাদের কোনো মুল্য থাকে না। শ্রম মানুষকে সমৃদ্ধির পথে চালিত করার পাশাপাশি দেয় সৃজনের আনন্দ। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ...

সততা

সততা মানবচরিত্রের এক অনন্য গুণ। সততার ছোঁয়ায় মানবচরিত্র হয়ে ওঠে মহিমান্বিত। সত্যের শক্তিতে জাগ্রত ব্যক্তিই সব ক্ষেত্রে সততা প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে দিয়েই মানুষ অর্জন করে মনুষ্যত্ব। সততার অনুশীলনকারী ব্যক্তিকে সৎ বলা যায়। সৎ ব্যক্তিগণ সব ধরনের অন্যায় ও পাপাচার থেকে বিরত থাকেন। তাঁদের দ্বারা কখনো কারও অনিষ্ট সাধিত হয় না। বরং তাঁরা তাঁদের কাজের মাধ্যমে অন্যের উপকার সাধন করেন। সৎ ব্যক্তি কথায় ও কাজে নিষ্ঠাবান হন। তাই সবাই তাঁর ওপর আস্থা রাখে; তাঁকে শ্রদ্ধা করে অন্তর থেকে।  অন্যদিকে, সততা থেকে বিচ্যুত ব্যক্তি সমাজের কলঙ্কস্বরূপ। তার দ্বারা অনেকের ক্ষতি সাধিত হয়। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সে নানারকমের অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে দ্বিধা করে না। এ ধরনের ব্যক্তি সমাজের বিবেকবান মানুষের কাছে ঘৃণিত। তাকে কেউ কোনো কিছুতে বিশ্বাস করে না। সৎ ব্যক্তির সততার নিদর্শন সবাইকে ভালো কাজে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে, অসৎ ব্যক্তির সাময়িক মোক্ষলাভ দুর্বল চিত্তের মানুষদের পাপাচারে লিপ্ত হতে উদ্বুদ্ধ করে।  তাই বলা যায়, সততাই মানবজীবনের চিরমুক্তি ও কল্যাণের পথ। সকল ধর্মেই সততাকে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হিসেবে উল্ল...

অলিম্পিক গেমস

অলিম্পিক গেমস হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো ও জাঁকজমকপূর্ণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আসর। চার বছর পরপর এটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর দুটি প্রধান প্রকরণ গ্রীষ্ম ও শীতকালীন প্রতিযোগিতা, যা আয়োজিত হয় দুই বছর পরপর। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতি দুই বছরে একবার অলিম্পিকের আসর বসে। প্রতিবন্ধীদের জন্য প্যারা অলিম্পিক এবং তরুণদের জন্য যুব অলিম্পিকও আয়োজিত হয়। প্রাচীন গ্রিসে দেবতা জিউসের আবাসস্থল অলিম্পিয়ায় ধর্মীয় রীতি-রেওয়াজের সঙ্গে অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হতো। মূলত প্রাচীন গ্রিক নগর রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরাই অংশ নিত এ প্রতিযোগিতায়। প্রথম দিকে অলিম্পিক ছিল কেবল এক দিনের একটি দৌড় প্রতিযোগিতার উৎসব। কালক্রমে এতে যুক্ত হয় নানা ধরনের পর্ব।  আধুনিক অলিম্পিকের প্রবর্তন ঘটে ফ্রান্সের মনীষী ব্যারন পিয়েরে কুবার্তার উদ্যোগে। ১৮৯৬ সালে গ্রিসের এথেন্সে আধুনিক অলিম্পিকের প্রথম আসর বসে। এরপর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিয়মিত এ আয়োজন হয়ে আসছে। সর্বশেষ, ২০১৬ সালে অলিম্পিক আয়োজিত হয় ব্রাজিলের রিওতে। ২৮টি ক্রীড়ার ৪১টি বিভাগে মোট ৩০৬টি ইভেন্টে প্রতিযোগিতা হয়। প্রতিযোগীদের মধ্যে বিশ্ববাসীর নজর ছিল আমেরিকার সাঁতারু মাইকেল ফেলপস্ এবং জ...

এ জগতে হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

এ জগতে হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি,  রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি। ভাব-সম্প্রসারণঃ পৃথিবীতে সম্পদশালীর সম্পদের প্রতি তৃষ্ণা দুর্নিবার ও অসীম। চির-অতৃপ্ত এ তৃষ্ণাকে চরিতার্থ করার প্রয়াসে তারা অনাহারী ও নিরন্ন মানুষের সম্পদকেও কেড়ে নিতে কুণ্ঠিত হয় না। ধনীদের দুর্নিবার সম্পদ-ক্ষুধা কোনোদিনই পরিতৃপ্ত হয় না। নিজেদের সম্পদের সংগ্রহকে বাড়িয়ে তোলাই যেন তাদের একমাত্র লক্ষ্য। সমাজের দুর্বল অংশকে শোষণ করেই দিনের পর দিন তাদের ঐশ্বর্য স্ফীত হয়ে উঠতে থাকে। অন্যদিকে, বিশ্বের বিত্তহীনরা তাদের শোষণে সর্বস্বান্ত হয়ে সাজে পথের ভিক্ষুক। বিত্তবানের এই অতিরিক্ত বিত্ত সংগ্রহের প্রবণতার কারণে সমাজে অনিবার্য হয়ে ওঠে নানা অশান্তি, সংঘাত ও সংগ্রাম। পৃথিবীতে যারা পর্যাপ্ত সম্পদের মালিক, যাদের ধনৈশ্বর্য অফুরন্ত, তাদের সম্পদ-তৃষ্ণা কোনোদিনই পরিতৃপ্ত হয় না। তারা যত পায়, তত চায়। বিবেকহীন, হৃদয়হীন মানুষেরা নানাভাবে সামাজিক সম্পদ অপহরণ করে দিনের পর দিন নিজেদের তথাকথিত মর্যাদার আসন উঁচু করে চলে। অপরিসীম ধনতৃষ্ণা ক্রমাগ্রত স্ফীতকায় হতে হতে একদিন দরিদ্রের সর্বশেষ সম্বল ছিনিয়ে নিতেও কুণ্ঠিত হয় না। এভা...

ভাষা ও ব্যাকরণ ।। পাঠ-১ঃ ভাষার পরিচয় ও সংজ্ঞা ।। ১ম খণ্ড

ভাষাঃ ভাব প্রকাশের মাধ্যম মানুষের পারস্পারিক ভাব বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম ভাষা। ভাব বিনিময়ের জন্য একেক সামাজের মানুষ গড়ে তুলেছে একেক রকম ধ্বনি ব্যবস্থা। মানুষ বাগযন্ত্রের সাহায্যে সৃষ্ট যেসব অর্থপূর্ণ ধ্বনির সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করে তাকেই ভাষা বলে। আর এ অর্থবোধক ধ্বনিই হলো ভাষার প্রাণ। ভাষা আসলে নানা ধরনের সংকেতের সমাহার। অর্থ বহন করার জন্য ভাষা সংকেত ও ধ্বনি ব্যবহার করে থাকে। আমরা মুখের নানা ভঙ্গি করে কান্না, হাসি, জিজ্ঞাসা, বিস্ময় ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করি। আবার অঙ্গভঙ্গি বা ইঙ্গিত করেও আমরা নানা ভাব বুঝিয়ে থাকি। এগুলো সবচেয়ে সরল সাংকেতিক ভাষা। দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা সংকেতচিহ্ন দেখে কাজ করি কিংবা কাজের ধরন পরিবর্তন করি কিন্তু সব সংকেতচিহ্ন ভাষা নয়। ভাষা হচ্ছে ধ্বনি উচ্চারনের মাধ্যমে ভাব বিনিময়ের বিশেষ ধরনের সংকেতচিহ্ন। সবচেয়ে সহজতর ধ্বনি ভাষা হচ্ছে গোঙানি, কান্না, কিংবা ভাবাবেগ (যেমনঃ ওঃ, আঃ, হুঁ, ইস্); এগুলো সুনির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে। সবচেয়ে বিশদ ধ্বনি ভাষা হচ্ছে মানুষের কথা― এর মাধ্যমেই মানুষ পরস্পরের সাথে ভাব বিনিময় করে থাকে। কথা বলার সময় মানুষ নানারকম অঙ্গভঙ্গি করে থাকে। ...

করোনার এই সময়ে মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সচেতন করে বন্ধুকে একটি পত্র লেখো।

বাঘা, রাজশাহী ২৪শে এপ্রিল, ২০২১ প্রিয় তানিয়া, আশা করি ভালো আছ। তুমি তো জানো, বর্তমানে করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে আমাদের সাবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনোভাবেই বাইরে যাওয়া যাবে না। অপরিষ্কার হাতে মাস্ক স্পর্শ করা যাবে না। মাস্ক পরা অবস্থায় সর্দি, কাশি বা হাঁচি এলে সাথে সাথে তা পরিবর্তন করতে হবে। মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে। এটি ব্যবহার করলে কেবল যে তা করোনাভাইরাস থেকেই রক্ষা করবে তা নয়, এর আরও উপকারিতা আছে। তুমি যদি নিয়মিত মাস্ক পরো, তাহলে ধুলাবালি থেকেও সুরক্ষিত থাকতে পারবে। আবার নাক, মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এমন সংক্রামক রোগের জীবাণু থেকেও নিরাপদ থাকতে পারবে। তাই নিয়মিত মাস্ক পরবে। আজ আর নয়। তোমার আব্বু-আম্মুকে আমার সালাম দিও। ভালো থেকো। ইতি তোমার বন্ধু তমা [message] বিশেষ দ্রষ্টব্য এখানে প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানা-সংবলিত খাম আঁকতে হবে।

বাংলাদেশের কৃষক

বাংলাদেশের কৃষক বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের জাতীয় অর্থনীতি অনেকটা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নতুন নতুন ফসলের অযুত সম্ভারে এদেশকে যারা সমৃদ্ধ করছে তারা হলো বাংলাদেশের কৃষক, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র ও নিরক্ষর। অথচ তারাই এদেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ দেশ ভরে ওঠে ফসলের সমারোহে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য উপাদান খাদ্য তথা ভাত, ডাল, শাকসবজি সবই আসে কৃষি থেকে আর তা উৎপাদন করে কৃষক। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত অনেক শিল্প কৃষিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।  বাংলাদেশের কৃষকরাই এসব শিল্পের কাঁচামালের জোগান দেয়। যেমনঃ বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পের প্রধান উপকরণ পাট, তুলা, রেশম ইত্যাদি আসে কৃষি থেকে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কৃষক বিশেষ ভুমিকা রেখে চলেছে। পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃষি ও কৃষকের এত এত অবদান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের কৃষকের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক।  বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষক ভূমিহীন। অন্যের জমিতে তারা বর্গাচাষ করে। অনেকের হালের বলদ পর্যন্ত নেই। এছাড়া মধ্যস্বত্ব...